ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন বিচার
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ক্যাম্পাস
  5. খেলাধুলা
  6. গণমাধ্যম
  7. জনপ্রিয় সংবাদ
  8. জাতীয়
  9. বিনোদন
  10. রাজধানী
  11. রাজনীতি
  12. শিল্প ও সংস্কৃতি
  13. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সৈরাচারী হাসিনার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।

admin
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫ ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিভাগীয় প্রধান (ঢাকা) জিল্লুর রহমান

সিমিন রহমানের হত্যা, শেয়ার জালিয়াতি এবং প্রতারণার একাধিক মামলা ধামাচাপা দিতে ১০০ কোটি টাকা ঘুষ প্রদান ।
ঢাকা বিভাগীয় প্রধান মোঃ জিল্লুর রহমান শিপলুঃ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১০০ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধর প্রয়াত শিল্পপতি লতিফুর রহমানের মেয়ে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সিইও সিমিন রহমান। হত্যা, শেয়ার জালিয়াতি এবং প্রতারণার একাধিক মামলা ধামাচাপা দিতেই শেখ হাসিনাকে বিপুল পরিমান টাকা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এজন্য গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সিমিন রহমান তিনদফা বৈঠকও করেন বলে জানা গেছে। ৫আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া সৈরাচারী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সিআইডি এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ঘুষের এই টাকা শেখ মুজিব জাদুঘর ট্রাস্টের জন্য ৫০ কোটি, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের উন্নয়ন সংস্থা সূচনা ফাউন্ডেশনের জন্য ২৫ কোটি এবং নগদ ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। গণভবনে উপস্থিত হয়ে শেখ হাসিনাকে এই অর্থ তুলে দেন সিমিন রহমান। এরমধ্যে শেখ মুজিব জাদুঘর ট্রাস্ট ও সূচনা ফাউন্ডেশনকে চেকের মাধ্যমে মোট ৭৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়। দুটি চেকই ছিল স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের। একটি চেক ছিল শেখ মুজিব জাদুঘর ট্রাস্টের জন্য। ৫০ কোটি টাকার এ চেকটি শেখ হাসিনা জাদুঘর ট্রাস্টের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খানের (সাবেক সচিব) কাছে হস্তান্তর করেন এবং তা পরবর্তীতে নগদায়ন করা হয়। দ্বিতীয় চেকটি ছিল সূচনা ফাউন্ডেশনের। ২৫ কোটি টাকার ওই চেকটিও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এবং গতবছর ২৭ মার্চ ওই চেকটি নগদায়ন করা হয়েছিল সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এ চেকের সূত্র ধরেই সূচনা ফাউন্ডেশনের অবৈধ সম্পদের উৎস অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সূচনা ফাউন্ডেশনের অ্যাকাউন্ট নিরীক্ষা করে সেখানে সিমিন রহমানের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ২৫ কোটি টাকার চেক নগদায়নের তথ্য পাওয়া গেছে। এই ঘুষ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হত্যা ও শেয়ার প্রতারণা মামলায় সিমিন রহমান গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হন। এবং তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলারই তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমানের বড় ছেলে আরশাদ ওয়ালিউর রহমান ২০২৩ সালের ১৬ জুন রহস্যজনকভাবে মারা যান। কিন্তু ছোট বোন শাযরেহ হক ভাইয়ের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ তোলেন। তিনি দাবি করেন, পৈতৃক সম্পত্তি আত্মসাতের জন্যই আরশাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এজন্য তারই আপন বোন সিমিন রহমানকে দায়ী করেন। অভিযোগ ওঠে, আরশাদের মৃত্যুর পর ইউনাইটেড হাসপাতালকে চাপ প্রয়োগ করে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেন সিমিন রহমান। সেই অনুযায়ী তিনি মৃত্যুর সনদও জোগাড় করেন। সেখানে সিমিনের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি এসকেএফ-এর কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আরশাদের মৃত্যুর পর সিমিন রহমানের রহস্যজনক তৎপরতা কারও নজর এড়াতে পারেনি।
ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমান ২০২০ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চিওড়ায় নিজের বাংলোতে নিঃসঙ্গ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। অভিযোগ রয়েছে, লতিফুর রহমান বেঁচে থাকতেই তাঁর সব সম্পত্তি কুক্ষিগত করেন সিমিন রহমান। এমনকি লতিফুর রহমানের মৃত্যুর পর জাল দলিলের মাধ্যমে ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমান এবং বোন শাযরেহ হকের সম্পত্তিও কুক্ষিগত করেন সিমিন রহমান। আর আরশাদ রহমান যখন এটা জানতে পারেন তখন তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেন। তাঁর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের খবর পেয়ে সিমিন রহমান আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে হত্যা করেছেন বলে শাযরেহ হক অভিযোগ করেন।

এমন প্রেক্ষাপটে গতবছর ২২ ফেব্রুয়ারি বোন সিমিন রহমান এবং মা শাহনাজ রহমানের বিরুদ্ধে শেয়ার জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন শাযরেহ হক। তদন্তে নেমে পিবিআই ট্রান্সকম গ্রুপের পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় সিমিন রহমান দেশের বাইরে ছিলেন। তার বাড়িতেও পুলিশ অভিযান চালায়। বিদেশ থেকেই তিনি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশে ফিরেই জামিন পান সিমিন রহমান ।
পরবর্তীতে ভাই আরশাদকে হত্যার অভিযোগে গত বছর ২২ মার্চ গুলশান থানায় পৃথক একটি মামলা করেন শাযরেহ হক। এ হত্যা মামলায় সিমিন রহমান ও সিমিন রহমানের ছেলে যারাইফ আয়াত হোসেন, এবং ট্রান্সকম গ্রুপের এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালের বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। আরশাদ ওয়ালিউর রহমানের মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। পোস্টমর্টেমও করা হয়েছিল নতুন করে। মামলা নিয়ে অনুসন্ধানের কাজও এগিয়েছিল অনেকখানি। কিন্তু হঠাৎ উচ্চমহলের নির্দেশে এ মামলার তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। আরশাদকে হত্যা মামলার তদন্ত স্থগিত হয়ে যায় রহস্যময় কারনে। মূলত একশ কোটি টাকা ঘুষ দেবার পরই সবকিছু পাল্টে যায়।