ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বিএনপি দলিয় এমপি প্রার্থী ওবায়েদুর রহমান চন্দন গ্রুপের ঈদ শুভেচ্ছা ব্যানারর চুঁরির অভিযোগে পার্টি অফিসে হামলা ও চাঁদার দাবি করায় ছাত্রলীগসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে বড়াইল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি জয়নাল আবেদিন পুলি।
গত ৩১ মার্চ সোমবার উপজেলার হিন্দা শিমুলতলী বাজারে এঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, গত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চাঁদ রাতে উপজেলার হিন্দা শিমুলতলী বাজারে ঈদগাহ মাঠের সামনে দু’পাশের গাছের সাথে বিএনপি দলিয় এমপি প্রার্থী ওবায়েদুর রহমান চন্দন গ্রুপের ঈদ শুভেচ্ছা ব্যনারর টাঙ্গীয়ে দেয় তাঁর সমর্থক’রা। ওই রাতে সাগর, মোস্তাক ও মোহন-১-২সহ স্থানীয় কয়েকজন ছেলে বাজারের পাশে সুজনের বাড়ীতে পিকনিক খাওয়ার আয়োজন করে। রান্না হওয়ার পূর্বে তারা হিন্দা হাইস্কুল মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। ওই রাত ১০ টার পর মোহন ও সাগরকে রান্নার খবর নিতে সুজনের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তারা ঈদগাহ গেটের সামনে পৌছলে দুই পাশে গাছে টাঙানো সাদা ব্যানার দেখে রাতের বেলা ভয়পেয়ে আতকে উঠেন তারা। তখন স্কুল মাঠে বসে থাকা কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে তারা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেই এই ভীতিকর জায়গা থেকে ব্যানারটি সড়িয়ে রাখা উচিৎ। এই ভেবে ব্যানারটি খুলে পাশের ফজলুর বাড়ি রেখে চলে যায়।
এরপর পরের দিন সকালে ব্যানারটি দেখতে না পেয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনার ঝর উঠে। এক সময় তারা জানতে পারে ব্যানারটি চুরি হয়েছে। এঘটনায় বড়াইল ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারী আব্দুল হান্নান মন্ডল কৌশল করে ওই ব্যানার উদ্ধারকারীকে ৫ হাজার টাকা পুরুষ্কার দেওয়া হবে। ওইদিন সন্ধ্যায় বজরবরাহী গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে সোহান হারিয়ে যাওয়া ব্যানার নিয়ে সেক্রেটারী হান্নান মন্ডল এর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি হন। তখন তাকে আটকে রেখে জিজ্ঞেস করে ব্যানারটি কোথায় পাওয়া যায় এর সাথে কারা জড়িত তাদের নাম বলার জন্য চাপ দেয় এবং তাকে চড়থাপ্পড় মারে । এরপর সোহান ক্ষিপ্ত হয়ে স্কুল মাঠে গিয়ে সহপাঠীদের নিয়ে শিমুলতলী বাজারে বিএনপির পাটি অফিসে গিয়ে তর্কবির্তকের একপর্যায় হাতাহাতি হলে জয়নাল আবেদিন পুলি আহত হয়। আহত কর্মীকে হাসপাতালে দেখতে আসে জাতীয়তাবাদী বিএনপি রাজশাহী বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন।
এঘটনায় গত ৩ এপ্রিল আহত জয়নাল আবেদিন পুলি বাদী হয়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগে কর্মীসহ ১১ জন এবং অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে ভাংচুর ও ২লক্ষ টাকা চাঁদার অভিযোগ এনে ক্ষেতলাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আসামিরা হলেন—সোহান (২১), মোরসালিন (২০), পারভেজ (২২), রাহুল (২০), মুকিম (২১), রকি (২৪), মোরাদ (২২), জিসান (২৪), রাজু (২২), রিমন(২২) ও মহন (২০)। তবে মামলার আসামী গ্রেপ্তার হয়নি।
অভিযুক্ত সোহান বলেন, আমরা চাঁদরাতে একটা পিকনিক আয়োজন করি সুজনের বাসায়। সবাই আমরা মাঠে বসেছিলাম মোহন ও সাগরকে রান্নার খবর নেওয়ার জন্য পাঠিয়ে দেই। তারা ঈদগাহ মাঠের সামনে একটি সাদা ঝুলন্ত একটি কিছু দেখতে পায়, যা ভয়ঙ্কর লাগতেছিল। ওই ব্যানারটি দিনের বেলা ছিলো না আর ওখানে দোসঙ্গা জায়গা হওয়ায় ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। পরে মোহন পিছনে ছুটে আসলে সাগরকে নিয়ে সামনে গিয়ে দেখে ব্যানার। সাগর বলে ব্যানারটা খুলে রাখো আমি কালকে হান্নান নানার হাতে পৌঁছায়ে দিব। তখন মোহন ব্যানারটি খুলে সাগরকে দেয়। সাগর তা দ্বায়িত্ব মতো পৌঁছায়েও দেয়। ঈদের দিন সন্ধ্যাবেলা সাগরকে দিয়ে আমাকে বি এন পি পার্টি অফিসে ডাকে নেয় এরপর আমাকে সেক্রেটারী আব্দুল হান্নান মন্ডল অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধর করে। রিদয় ও মাহবুব রহমান কে হুকুম করে আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলে আমি মাথা নত করে চলে যাই। পরেরদিন সকালে তারা আমাদের উপর মামলা করে যা পুরাটাই মিথ্যা ও বানোয়াট। আর আমরা কোন রাজনীতির সাথে জড়িত না।
এমামলার ১ নম্বর সাক্ষী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ইদ্রীস আলী বলেন, রাজনৈতিক মামলা ত্রুটি বিচ্যুত্তি থাকবে। ছাত্রলীগের তিন কর্মী উপস্থিত না থাকলেও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় তাদের নামে মামলা করা হয়েছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য মাছুদ রানা (এমামলার ৪ নম্বর সাক্ষী) চাঁদা দাবি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মারামারি সময় আমি উপস্থিত ছিলাম সেখানে চাঁদার বিষয়ে আমি জানিনা।
এঘটনায় বড়াইল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মন্ডল বলেন, এঘটনা নিয়ে উদ্ধতোন নেতারা দেখছে এবং আইনি প্রক্রিয়ার রয়েছে।
ক্ষেতলাল থানার ওসি (তদন্ত) বীরেন্দ্র সিং মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “বিএনপি ও ছাত্রদল কর্মীদের ওপর হামলা এবং ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের তৎপরতা চলছে।